Fair Price Diagnostic Center – স্বাস্থ্য সাথীর থেকেও কমে হবে MRI, সি টি স্ক্যান, কলকাতায় চালু হলো নতুন পরিষেবা

দিনের পর দিন চিকিৎসা পরিষেবা দুর্মূল্য হয়ে উঠছে। বিশেষ করে সাধারণ, মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, গরীব শ্রেণীর মানুষ একটু ভালো চিকিৎসা পরিষেবা নিতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। পরিবারের কোনো প্রিয়জনের চিকিৎসার জন্য আনুষঙ্গিক যে সমস্ত খরচ এসে পড়ে সেই সাধারণ মানুষদের উপরে, তখন তারা তাদের সেই সামর্থ্য না থাকায় ভেবে কুলকিনারা পান না, কিভাবে তার প্রিয়জনের চিকিৎসা করবেন? বেসরকারি চিকিৎসা ক্ষেত্রে টাকা ছাড়া তো কোনো কথাই হয় না (Expensive Medical Treatment in Private Sector) রাজ্যের আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমের তরফে সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিতে দেখা যায়। কিন্তু তারপরেও যখন বাস্তবে তারা সেই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন, তখন আর মানুষকে সেই ধরনের পরিষেবা দেন না বলে একাধিকবার অভিযোগ উঠেছে।

চিকিৎসা পরিষেবা ক্ষেত্রটি যেন বর্তমানে রীতিমতো ব্যবসার একটা বড় জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেই দিকে নজর দিয়েই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর (Swasthya Sathi Card) প্রচলন করেছিলেন। এই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর মাধ্যমে যাতে সাধারণ, মধ্যবিত্ত, গরিব মানুষেরা একটু ভালো চিকিৎসা পেতে পারেন। কিন্তু সেক্ষেত্রেও একশ্রেণীর হাসপাতাল বা নার্সিংহোম স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে গেলে প্রত্যাখ্যান করে। সরকারের তরফে বেশ কয়েকবার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এবার আরো একধাপ এগিয়ে কলকাতা কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিষেবা দেওয়ার জন্য অভূতপূর্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হয়েছে। যার ফলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। এখন জেনে নেওয়া যাক, কলকাতা কর্পোরেশনের তরফে কি সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে?

❖  Related Articles

কলকাতা পুরসভা এলাকার খিদিরপুরের ৯ নম্বর বোরোর ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডের মনসাত্তলা লেনে ফেয়ার প্রাইস ডায়াগনস্টিক সেন্টার (Fair Price Diagnostic Center) চালু করা হয়েছে। সম্প্রতি এই ন্যায্য মূল্যের ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি উদ্বোধন করেন কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র ফিরহাদ হাকিম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর রেহানা শামীম খান, বোরো চেয়ারম্যান দেবলীনা বিশ্বাস সহ পুরসভার অন্যান্য আধিকারিকরা। এই ফেয়ার প্রাইস ডায়গনস্টিক সেন্টারে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর নির্ধারিত মূল্যের থেকেও আরো ৬২ শতাংশ কম দামে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যাবে। যা এক কথায় অভূতপূর্ব। কারণ এই মুহূর্তে সিটি স্ক্যান (C.T Scan) বা এমআরআই (MRI), ডিজিটাল এক্সরে (Digital X-ray), (Ultrasonography) বা সেই ধরনের কোনো বড় পরীক্ষা করাতে গেলে হাজার হাজার টাকার প্রয়োজন পড়ে। যা অনেক সময় সাধারণ মানুষের পক্ষে দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনা। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কলকাতা পুরসভার তরফে এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।

আরও পড়ুন » রাজ্যে চালু হলো যোগ্যশ্রী প্রকল্প, জেনে নিন কি কি সুবিধা মিলবে

এই সেন্টারটির উদ্বোধন করে ফিরহাদ হাকিম বলেন, দেশের মধ্যে ন্যায্যমূল্যের এরকম ডায়াগনস্টিক সেন্টার এই প্রথম। এখানে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর নির্ধারিত মূল্যের থেকেও ৬২ শতাংশ কমে এমআরআই, সিটি স্ক্যান, ডিজিটাল এক্স এর মত বৃহৎ মাপের পরীক্ষা করা যাবে। একবার জেনে নেওয়া যাক, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর সঙ্গে এই ফেয়ার প্রাইস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষার পার্থক্যটি:-

স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে পেটের Whole Abdomen বা পুরোপুরি সিটি স্ক্যান করতে গেলে খরচ পরে ১৭৪০ টাকা। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই সেন্টারে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর থেকে ৬২ শতাংশ কমে খরচ পড়বে ৬৬২ টাকা।

পেটের Lower Abdomen বা আপার এবডোমেনের পরীক্ষা করতে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর নির্ধারিত দাম হল ৮৭০ টাকা। সেক্ষেত্রে এই সেন্টারে তা ৩৩১ টাকায় করা যাবে। এছাড়াও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, এই ফেয়ার প্রাইস ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ২২৬ টাকায় সিটি স্ক্যান এবং ৯৪০ টাকায় এমআরআই করা যাবে। এই ফেয়ার প্রাইস ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর বাইরে সমস্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার দাম সমেত বোর্ড টাঙ্গানো থাকবে। ফলে সমস্ত মানুষ এই সেন্টারে পরীক্ষার খরচ দেখতে পাবেন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড এর থেকে সমস্ত পরীক্ষার ক্ষেত্রেই ৬২ শতাংশ কম দাম নেওয়া হবে। কর্পোরেশনের ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, এই ফেয়ার প্রাইস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করাতে গেলে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড সঙ্গে আনতে হবে। এই সেন্টারে কোমর এবং ঘাড়ের C.T Scan করা যাবে।

আরও পড়ুন » আয়ুষ্মান কার্ড তৈরি করতে এখন আর লাগবে না রেশন কার্ড! নতুন নির্দেশ দিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

কলকাতা পুরসভার পরিচালনায় এই ন্যায্য মূল্যের ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি তদারকির দায়িত্বে থাকবে রিলায়েবল ডায়গনস্টিক  নামে একটি সংস্থা। বর্তমান সময়ে যখন সাধারণ মানুষের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা নেওয়াটা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে, তখন কলকাতা পুরসভার তরফে এই ন্যায্য মূল্যের ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর উদ্যোগটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। যার ফলে সাধারণ মানুষ খুবই কম খরচে তাদের চিকিৎসার প্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারবেন। আর এর ফলে তারাও উপকৃত হবেন।
Written by Rajib Ghosh.

🔔 বিভিন্ন ধরনের সরকারি প্রকল্প, চাকরি, শিক্ষা ও স্কলারশিপ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আপডেট মিস করতে না চাইলে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপটেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হোন –

Leave a Comment

JoinJoin